শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৪ অপরাহ্ন
আইনুল হোসেন, সানু
ওরা নারী, ওরা অবলা
ছিলো চার দেয়ালে বন্দী এতদিন!
অতি লক্ষী, ছিলো শুধুই ঘরের সোভা,
দিয়ে বলিদান শতবার গড়তে
সুখের ঘর ভুলি করবে
জীবন দান !
পিতা মাতা ভাই সন্তান, আগলে
জনম ভর রাখবে, বক্ষে
আড়াল করি !
ভগ্নি-কেও সন্তান সম —যেমনি
করে ছোট্ট কালে সোহাগে
রেখেছিলো মা’ য়ে —–
দেবেনা, লাগতে গায়ে আঁচর তার
থাকতে নিজের জান !
ঘরের কোণে ছিলো যে’ নারী একদিন
চুপি সারে! এক পা’ দু’ পায়ে আজ
ঘরের বাহির, শিরদাঁড়া’ টা সোজা করে
দাঁড়িয়ে নিজের পায়ে !
ছুটছে ওরা
দেখো দিগন্ত দিতে পাড়ি, হয়ে
দূরন্ত দূর্বার !
সেই নারী’ কে দেখছে জগত আজ ভিন্ন
নতুন রূপে, জানবে দিনে দিনে
আরও সুপরিসরে !
এতকাল যে’ নারী
খেটেছে গাধার খাটুনি, মুখটি বুজে
সয়েছে যত নির্মম পিটুনি !
ভেবে, ভয়ে একা হয়ে কুঞ্চিত
দূর্বল চিত্তে, লাঞ্ছনা আর
অবজ্ঞারই ছলে!
নেই আগের মত আজ, ওরা
অকুতোভয় বিদ্যান, অনেক স্বাবলম্বী !
চলতে শিখেছে পথ আজ একাকি
স্বাধীন, হোঁচট খেয়ে পড়ে না
আর পথে একটু এমন
তেমন হলেই !
ঘরে ঘরে ওরা আজও
স্ত্রী মাতা ভগ্নি, ওরা কন্যা জায়া জননী!
আজ ওরা প্রশাসক, দীপ্ত কন্ঠে
নিয়েছে কঠিন শপথ !
চলছে পথ আজ দেখো নির্ভিক, চলছে
সময় যেন ওদের হাতটি ধরে !
ভালো মন্দ
মিলেই কিন্তু সব, নয়
ওরা তার বাইরে —
করছে ওরা শাসন একই হাতে
ঘরে আর বাইরে কঠোর, –মমতা
মিশিয়ে ভিতরে !
ওরা আজও ঘর কন্যা,
নিজ হাতেই করে রান্না বান্না ! সেই হাতে
ওরা চালায় এখন গাড়ি –দিচ্ছে,
আকাশ পাড়ি –বানায় নিত্য
নতুন বাড়ি —ঘরে বাইরে সর্বস্তরে ওরা
এখনও পড়ে কিন্তু শাড়ি !
উঠতে বসতে
কথায় কথায় সে’ দিনের মত
করে না ওরা আজ আর
মিথ্যে অভিমান, —
ভাঙাতে অভিমান দেখি
অনেক অগ্রদীপ্ত !
ঘরে রান্না বান্না
মাজতে ঠেলতে হাড়ি,
দেখো আজ খেলতে ওরা দিচ্ছে
বিশ্বে পাড়ি!
ওরা ছিলো অবলা নারী, চিনতো
শুধু ই গয়না শাড়ি !
সেই ওরা আজ যুদ্ধে
নিয়ে অস্ত্র হাতে, গড়তে দেশ মরিয়া –ওরা
রাখছে অবদান!
সে’ খবরও জানি! ওরা ইঞ্জিনিয়ার, আজ
ওরা হয়েছে বিজ্ঞ ডাক্তার, এ’ সব
দৃঢ় প্রত্যয়ে ই মানি!
ওরা কাটছে সাঁতার,
নামছে পানিতে ঝড় ঝঞ্ঝাট ভুলে
তুচ্ছ করি জীবন, দিচ্ছে ডুব
সিন্ধু সাগর তলে —-
আনছে তুলে ঝিনুক মুক্তর মালা গেঁথে
পড়াতে, দেশ মাতৃকার গলে !
আজ খেলছে ওরা ফুটবল,
পিটছে ব্যাট ও বল
হেঁকে ভাঙছে সমোস্বরে প্রতিপক্ষের
ষ্ট্যাম্প অবিরাম! গ্রীস্ম বর্ষা আর শীতে,
প্রখর রোদে পুড়ে হোক দেশে
কিম্বা সে’ বিদেশে-তে !
ওরা নয় কিছুতে পিছিয়ে সর্বময়, আজ
করতে সর্বজয় বেঁদেছে হাতে মুষ্টি
নিচ্ছে ছিনিয়ে তুষ্টি ওরা
উড়ছে বিমান করে আজ দেখতে
বিশ্ব ঘুরে, পায়না ওরা এখন
কোনো কিছুতেই ভয়!
ওরা রেখেছে জীবন বাজি
দিয়েছে ভুলিয়ে ছিলো যত পরাজয়ের
গ্লানি সে’ সব আজি!
ওরা আনছে জিতে সোনা
উচিয়ে ধরেছে শিখরে দেশের পতাকা
বাড়িয়েছে সম্মান!
স্তম্ভিত আজ বিশ্ববাসী ওদের
দৃঢ়তা দেখে,
নিথর ভাবছে বসে অবাক চিত্তে!
আজ, ঠুকছে ছালাম শত অপরাজেয়
বাংলা বিজয়ী নারী’ র গভীর
সে’ সম্মানে !
ওরা চলছে বুক উচিয়ে
হাসছে গভীর সুখে, দেখি
বিশ্বজয়ী হাসি যেন আজ সবার
মুখে মুখে! গাইছে উল্লাসেতে চলছে
আয়োজন আজ সর্বত্র, দেখাতে
ভক্তি আর সম্মান !
দু’ চোখ ভরা স্বপ্ন
হবে একদিন বিশ্ব বিজয়ী ওরা
প্রতিক্ষেত্রে! বিশ্বটাকে মুঠিতে নিয়ে ভরে
সে’দিন, জমাবে চাঁদে পাড়ি!
আজ নিজেকে লাগে অনন্য, ভাবে
জীবন আজ সত্যিই যেন ধন্য !
পৃথিবী’ টাকে লাগছে আজ
কি’যে অনন্য —
বিস্ময় ভরা চোখে, অন্যের
মনের আয়নায় দেখছে নিজেকে আজ
নতুন করে গভীর সুখে নিজের
দু’চোখ মেলে —-
বংশ পরমপরায়
ওরা আজও অগ্র পথিক —ঘরে
আনতে নতুন মুখ,
হাজার যাতনা কষ্টে পায় সুখ! থেকেও
অনাহরে খোঁজে নিত্য, সত্যি
কারের সুখ!
ওরা ত্যাগিছে নিজের সুখ, বিলায়
নিজেরে আপন পরের মাঝে!
রাখতে ঘরে সুখ, বন্ধ নিজের মুখ!
ওরা দেখে ওনা দেখে দু’ চোখ খুলে,
সইছে সকল দুঃখ সে’তো অতি
নিরব রয়ে !
ঘরে বাইরে ওরা
আজ সবার অতি প্রিয় –ওরা
স্ত্রী মাতা ভগ্নি, ওরা কন্যা
জায়া জননী!
আজ ওরা নয়ত
কেবল নারী !
দেশ মাতৃকার মেয়ে
ওরা বাংলার দুর্জেয় নারী !
মাতৃভূমি বাংলা মায়ের চির গৌরব
বিশ্ব সেরা নারী’, দীপ্ত অগ্রগামী —
ওরা সবাই ‘বাংলা মায়ের
চোখের মনি …..
লেখকঃ প্রতিভাবান কবি, লেখক, গল্পকার, প্রবন্ধকার ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব